ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই ছোট-বড় গ্রাম-শহরের দোকানগুলো বিভিন্ন রকমের গ্রিটিংস্ কার্ডে ভরে উঠত।বিক্রেতা পুরো দোকান জুড়ে কার্ড সাজিয়ে রাখত। একসময় মিকি মাউস থেকে শুরু করে গোলাপ, সূর্যমুখী, টেডিতে সজ্জিত কার্ড গুলো খুব সহজেই সকলের নজর কাড়ত। দুই, পাঁচ, দশ থেকে পঁচিশ, ত্রিশ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন রকমের কার্ড পাওয়া যেত সেইসব দোকানে।কচি কাচা থেকে শুরু করে বড় রাও বন্ধুদের জন্য গ্রিটিংস্ কার্ড কেনায় আগ্রহী হয়ে ভিড় জমাত।সে যেন এক ভিন্ন আনন্দের সমাহার ছিল। স্কুল, টিউশন ,কোচিং এর সব বন্ধুদের জন্য গুনে গুনে কার্ড কিনে এনে খামের ওপরে পেন দেওয়া হতো - "HAPPY NEW YEAR"।
সেই কার্ডে লেখার আনন্দই ছিল অন্যরকম। সব থেকে পছন্দের কার্ডটি প্রিয় বন্ধুর জন্য আলাদা করে রাখার অনুভূতি আজ যেন পুরো ফ্যাকাসে।
বড়দিনের ছুটির পর যেদিন স্কুল খুলত সে এক দারুন অনুভূতি নিয়ে ছাত্র ছাত্রীরা ব্যাগে গ্রিটিংস্ কার্ডগুলো ভরিয়ে নিয়ে সবার আগে স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করে কার্ড দিয়ে হাসিমুখে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করার মজাই আলাদা ছিল।প্রত্যেকেই উৎসুক হয়ে থাকত কত গুলো কার্ড পাবে সেকথা ভেবে।
বন্ধুদের থেকে পাওয়া কার্ডগুলো সযত্নে ব্যাগে ভরে বাড়ি এনে জমিয়ে রাখা। এ সব কিছুই আজ স্মৃতির পাতায় ।
কালের নিয়মে দিন বদলেছে, সাথে আমরাও বদলে গিয়েছি।আজ গ্রিটিংস্ কার্ডের বদলে দামি দামি ফোনের ইনবক্সে মেসেজ করে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানো হয় । তবে সেদিনের পাঁচ টাকার কার্ড পেয়ে যতটা আনন্দ হতো, এখন দামী হাজার হাজার টাকার স্মার্টফোনের মেসেজে তা পাওয়া যায়না।
আজকের দিনে ব্যাস্ততার গতিময় জীবনে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য সেই আগেকার দিনের গ্রিটিংস কার্ড এর বদলে আমরা বেছে নিয়েছি মোবাইল ফোনের হোয়াটসপ এর ইনবক্স, ফেসবুকের টাইমলাইন কে।তাই নাতো আজ রামু কাকার দোকানে ঝুলে ওই ৫ টাকার গোলাপ আঁকা গ্রিটিংস কার্ড,আর নাতো মেলে কোন হাতে লেখা শুভ নববর্ষ শুভেচ্ছা বার্তা।বিজ্ঞানের যুগে অচিরেই স্মৃতির পাতায় মুড়ে দেওয়া হয়েছে গ্রিটিংস কার্ডকে।
আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
|
সবার আগে খবর পেতে , পেইজে লাইক দিন
|