যশোর জেলার অংশ বিশেষ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকের অভয়নগর, মনিরামপুর এবং কেশবপুরের বৃহদাংশের ১২০ টি গ্রামের কয়েক লক্ষাধিক জনগণ দীর্ঘ দেড় মাস যাবত স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধ হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। কিন্তু এই দীর্ঘদিন যাবত জলাবদ্ধ জনগণের খোঁজ নেওয়ার জন্য আজ পর্যন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি- বেসরকারি কর্মকতাসহ সামাজিক,রাজনৈতিক সংগঠনের কোন কর্তা ব্যক্তির দেখা মেলেনি।ফলে জলভাসী মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা ও ক্ষোভ।
ভবদহ অঞ্চলের স্থায়ী জলাবদ্ধতা রোধকল্পে গত ২৫ সেপ্টেম্বর - ২০২১ পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোর জেলা প্রশাসকের মিলনায়তনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব,সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং সর্বপরি দীর্ঘদিন যাবত ভবদহ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। উক্ত সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ হিসাবে লোক হাসানো সেচ পাম্প প্রকল্পে সমাধানের নিদান দেন।ফলে মতবিনিময় সভায় অংশ গ্রহনকারী অধিকাংশ লোক সেচ পাম্প প্রকল্পের তীব্র বিরোধিতা করেন কিন্তু তারপরেও কোন এক অদৃশ্য কারনে পানি উন্নয়ন বোর্ড
ব্যর্থ সেচ প্রকল্প জনগনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার জন্য গো ধরে আছে।ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় ভবদহ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত জনগণের মতানৈক্যের কারণে ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতার সমাধান পথ হারা পথিকের ন্যায় লক্ষভ্রষ্ট হয়ে আছে।
আর তাই ভবদহ অঞ্চলের ব্যাপক জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি লক্ষ্যে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি আজ ২ নভেম্বর -২০২১ রোজ মঙ্গলবার বিকাল ৪ ঘটিকার সময় পাঁচবাড়িয়া মুক্তেশ্বরী ডিগ্রি কলেজ মোড়ে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের জনগণকে নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
কার্ত্তিক বকসীর সঞ্চালনায় এবং হাজিরহাট এলাকার আহ্বায়ক শিক্ষক ভগিরথ হালদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক রনজিৎ বাওয়ালী, যুগ্মআহ্বায়ক গাজী আব্দুল হামিদ, সদস্য সচিব চৈতন্য কুমার পাল, সংগ্রাম কমিটির নেতা অধ্যাপক অনিল বিশ্বাস, চলিশিয়া আঞ্চলিক কমিটির সাবেক সদস্য সচিব শিবপদ বিশ্বাসসহ অন্যান্য সুধীজন।
সভায় বক্তারা ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কোন কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যাপক সমালোচনা করে ১.এখনই ২১ ভেন্টের স্লুইসগেট গেট খুলে দিয়ে ভাটিতে অন্তত ৬ কি. মি.চ্যানেল তৈরি করে বাড়িঘরের পানি নিষ্কাশন ,২.অবিলম্বে বিল কপালিয়ায় টিআরএম ( টাইডাল রিভার্স ম্যানেজমেন্ট)চালু,৩.জমি অধিগ্রহণ করে আমডাঙা খাল গভীর ও প্রশস্ত করা ৪. লোকদেখানো হরিলুট মার্কা সেচপাম্প প্রকল্প বাতিল এবং ৫.ছোট-বড় সকল নদ-নদী ও খাল সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে পুনঃখননের দাবি করেন।
উপরে উল্লেখিত দাবি পূরণ না হলে স্থানীয় সকল জনগনকে সাথে নিয়ে বৃহৎ ও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।
সভায় ৩১ সদস্য বিশিষ্ট হাজিরহাট আঞ্চলিক কমিটি গঠন করা হয় এবংআগামী ৫ নভেম্বর-২০২১ রোজ শুক্রবার অভয়নগর ও মনিরামপুরের সীমান্তবর্তী মশিয়াহাটিতে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
|
সবার আগে খবর পেতে , পেইজে লাইক দিন
|